জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে তাঁর আশীর্বাণীতে আম্মা বলেন, ‘‘শ্রীকৃষ্ণ জয়ন্তী হল সেই দিনটি যখন বিশ্বচৈতন্য কৃষ্ণরূপে ধরায় আবির্ভূত হন- সর্বজীবের আকর্ষণকারী কৃষ্ণ. শ্রীকৃষ্ণ সম্ভবত সর্বোত্কৃষ্ট ব্যক্তিত্ব যা মানবজাতি এ পর্যন্ত দেখেছে. তাঁর জীবন ও উপদেশ তখনকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল, বর্তমানেও তাই এবং চিরকাল তাই থাকবে. স্থান-কাল নির্বিশেষে তাঁর জীবন ও বাণী সকলের জন্য উদাহরণস্বরূপ, ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষ হলেও. হাজার হাজার বছর পরেও কৃষ্ণচরিত্রের মহিমা ও গুরুত্ব হ্রাস পায়নি. সত্যি বলতে কি, শ্রীকৃষ্ণ হলেন আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় – জ্ঞানের বিশ্বভাণ্ডার. তিনি আমাদের দেখান সংসারকে পুরোপুরি স্বীকার করে নিয়ে কেমন করে পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজের ভূমিকা পালন করতে হয়. সেই কারণে লোকে তাঁর জীবন থেকে এত অনুপ্রেরণা লাভ করে.

মোক্ষ মৃত্যুর পরে লাভ করার জিনিস নয় – সেটা জীবনকালেই লাভ করা যায়. এই আদর্শটি শ্রীকৃষ্ণ নিজের জীবনের উদাহরণ দিয়ে শিখিয়ে গেছেন.

অসন্তোষ সত্যিকারের দারিদ্র – সন্তোষ সত্যিকারের সম্পদ. শ্রীকৃষ্ণ মানুষকে এই গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দিয়েছেন. তাঁর জন্মের সময় থেকে শুরু করে ইহলোকের অন্ত পর্যন্ত তাঁকে একের পর এক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়েছে. কিন্তু এগুলি তাঁর সুখ বা সন্তোষের উপরে কখনও প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি. তাঁর সদা হাস্যময় মুখমণ্ডল তাঁর অন্তরের নিখুঁত সন্তোষের পরিচয়.

সাধারণ অভিনেতা তার ছোট মঞ্চের উপর অভিনয় করে. কিন্তু শ্রীকৃষ্ণের কাছে সমস্ত বিশ্ব এক রঙ্গমঞ্চ ছিল. তিনি নানা ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, তাদের পোষাক-আষাক বদলেছে, কিন্তু তাঁর মনোভাবের কখনও পরিবর্তন হয়নি. ‘এসব ভূমিকার কোনটাই আমার আসল পরিচয় নয়. আমি মহাচৈতন্য.’ এমনি করে তিনি নিজের এবং সঙ্গীদের জীবনকে উত্সবে পরিণত করেছিলেন.’’