প্রযোজনের অতিরিক্ত নেওযা এবং অপচয করা অধর্ম।

পরিবেশ সংরক্ষণ আজ মানবজাতির মুখ্য সমস্যাগুলির মধ্যে একটি। এই প্রসঙ্গে যেসব সমস্যার মুখোমুখি আমরা হচ্ছি, তার সমাধান আমরা সহজে খুঁজে পেতে পারি যদি আমরা পূর্বপুরুষগণের প্রদর্শিত পথে চলতে প্রস্তুত হই। অতীতে প্রকৃতিকে রক্ষা করার জন্য আমাদের পূর্বপুরুষগণকে কোন বিশেষ প্রচেষ্টা করার প্রয়োজন হত না, কারণ তাঁদের জীবনধারার পদ্ধতিই প্রকৃতিকে রক্ষা করত। তাঁদের জীবন যাপন পদ্ধতি, পূজা এবং সাংস্কৃতিক প্রথার মধ্যেই প্রকৃতির সুরক্ষা অন্তর্নিহিত ছিল। তাঁদের রক্তের মধ্যেই এই ভাব ছিল – প্রকৃতিকে শোষণ না করে, ধ্বংস না করে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই প্রকৃতি থেকে নাও। কিন্তু আজ আমরা দেখতে পাই যে মানুষ প্রকৃতি এবং সাথী মানুষের কাছ থেকে সীমাহীন ভাবে নিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া, প্রায়ই দেখা যায় তারা নেবার সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতিকে ধ্বংসও করে। অতিরিক্ত নেওয়া এবং অপচয় করা অধর্ম। ১০০০ টাকা দামের ঘড়ি এবং ১০০০০০ টাকা দামের ঘড়ি একই সময় দেখায়। কিন্তু আমরা যদি ১০০০ টাকার ঘড়িতেই সন্তুষ্ট হই, তবে বাকী টাকা দিয়ে আমরা দরিদ্র ও দুস্থদের সেবা করতে পারি।

আতংকবাদরূপী মহামারী

আতংকবাদ মানবজাতির সবচেয়ে বড় সমস্যার একটি যা সমাজের শান্তি নষ্ট করছে। তথ্য থেকে জানা গেছে যে শুধুমাত্র ২০১৬ সালের এই কযমাসের মধ্যেই পৃথিবীর বিভিন্ন জাযগায় প্রায় ১২০০ বড়সড় আতংকবাদী হামলা হয়েছে। আজকে আমাদের জাগ্রত বাস্তব অতি বড় দুঃস্বপ্ন থেকেও বেশী ভয়ংকর।

প্রাকৃতিক বিপর্যয় আমাদের নিয়ন্ত্রণে না থাকতে পারে, কিন্তু আমাদের কাছে এমন কিছু টেকনোলজি আছে যা আমাদের সেগুলি সম্বন্ধে অগ্রিম সূচনা দিতে পারে। কিন্তু বিজ্ঞান আজও এমন কিছু আবিষ্কার করতে পারেনি যা মানুষ নিজের মনে যে ধ্বংসের বীজ বযে চলেছে, তা জানতে পারে। আজ মানবজাতি এক চলমান বিপর্যয়ে পরিণত হয়েছে!

করুণা লহরী

ভগবান সমস্ত সীমারেখা ও ভেদাভেদের অতীত অখণ্ড তত্ত্ব। প্রকৃতি, বায়ুমণ্ডল, পশু-পক্ষী, গাছপালা – তাদের প্রতিটি অনু দিব্যশক্তিতে প্লাবিত হয়ে রয়েছে। ভগবান সমস্ত জীব ও জড়ের মধ্যে পূর্ণরূপে বিরাজমান। এই সত্যের তাত্পর্য পুরোপুরি বুঝতে পারলে আমরা নিজেদের এবং আশেপাশের সকলকে ভাল না বেসে থাকতে পারব না। প্রেমের প্রথম লহরী আমাদের অন্তর থেকে নির্গত হয়। পুকুরের স্থির জলে নুড়ি ফেললে প্রথম ছোট ছোট লহরীগুলি নুড়ির কাছ থেকে আরম্ভ হয়। লহরীর পরিধি ক্রমে বাড়তে বাড়তে পুকুরের তীরে গিয়ে পৌঁছয়। একই ভাবে, প্রেম অন্তর থেকে আরম্ভ হতে হবে। আমরা যদি অন্তরের প্রেম পরিশুদ্ধ করতে পারি, তবে তা ধীরে বিস্তৃত হতে হতে সমস্ত বিশ্বকে ঘিরে ফেলবে।